পেয়াজু তৈরী এবং একজন অভিজ্ঞ পাচকের অভিজ্ঞতা

আমারব্লগ ডট কমে মুনিম সিদ্দিকী (http://munim.amarblog.com) একজন নিয়মিত এবং জনপ্রিয় ব্লগার। কাজের ক্ষেত্র মরক্কো থাকার সময়ের তাঁর অভিজ্ঞতা নিয়ে “মরক্কোর রোজনামচা” নামে নিয়মিত ব্লগ লিখছেন এবং তা আমারব্লগ ডট কম প্রকাশ করছেন। আমার ব্লগ ডট কমে প্রকাশ করা আমার পেয়াজুর রেসিপিতে মুনিম সিদ্দিকী তার পেয়াজু বানানোর অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন মন্তব্য আকারে, সবার জন্য টিপস দিয়েছেন। তারই লেখনীতে তা পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল – পেয়াজুর রেসিপি

পেয়াজুর বিষয়ে আমার অভিজ্ঞতা বলছি – আমরা যে ভাবে পেয়াজু তৈরি করি তাতে পেয়াজু খুব শক্ত হয়ে পড়ে যা পেটের জন্য মারাত্বক! ইচ্ছা করলে পেয়াজুকে মচমচে রেখেও নরম করা যায় অতিরিক্ত তেলমুক্তও করা যায়।

জীবনও জীবিকার তাগিদে কোন সময় আমাকে প্রতি দুদিন অন্তর ২ ইঞ্চি সাইজের কমচে কম ৫০০ পিস পিয়াজু বানাতে হয়েছিল।

আমি যখন প্রথম আমার ওস্তাদকে পেয়াজু বানাতে দেখি, তখন থেকে পেয়াজু নিয়ে চিন্তা করতে থাকি – কেমন করে তার স্বাদ, তার লুক, বাড়ানো যায় এবং তার সাইজ এক রাখা যায়।

যখনই এই পেয়াজু বানাবার দায়িত্ব আমার উপর এলো তখন থেকে লেগে গেলাম আমার পরিকল্পনাকে বাস্তব করতে।

পেয়াজুতে যে সব উপাদান আপনি (ভূলু’স রেসিপি) দিয়েছেন তার সাথে আমি বাড়তি পুদিনা পেস্ট, তন্দুরী মসল্লা পাউডার ও ডিম যোগ করতাম।

পুদিনা পেস্ট ও তন্দুরী মসল্লা দেয়ার কারন পিয়াজুর স্বাদে একটু ভিন্নতা আনা। এই বাংলাদেশে গুলশান ছাড়া এই মসল্লা কোথাও পাওয়া যাবে কিন আমি জানিনা। তবে এই দুই মসল্লা ছাড়াও চলবে। ডিম দেওয়ার কারন – ডিম দিলে পেয়াজুর শক্তভাব কমে যায়, এবং অতিরিক্ত তেল থেকে পেয়াজুকে মুক্ত রাখে।

সবগুলো পেয়াজু যাতে এক মাপের থাকে তার জন্য আমি কনডেন্স দুধের টিন কেটে ১/২ সেন্টিমিটার পুরু গোলাকার রিং বানিয়ে নিতাম। হাতের তালুতে রিংকে রেখে পেয়াজুর পেস্টকে আলতো করে চাপ দিতাম।

এখানে খেয়াল রাখতে হবে যে চাপ যেন বেশি না পড়ে। বেশি চাপ পড়লে পেয়াজুর মধ্য দিয়ে তেল চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। আর ভেতরটা কাচা থেকে যাবে।

পেয়াজু ভাজার সময় আমি তেলের তাপকে কঠোর ভাবে কন্ট্রোলে রাখতাম। যাতে কোন অবস্থায় তেল পুড়ে না যায়। থার্মমিটার থাকলে ৩৮০ ডিগ্রীতে রাখতে হবে। আর না থাকলে লক্ষ্য রাখতাম যাতে তেলের উপর ধোঁয়া না বের হয়।

একের পর এক পেয়াজু তেলে না ছেড়ে এক সাথে বানিয়ে ডিশে রেখে দিতাম। তেলের কড়াইতে এক সাথে যতগুলোর জায়গা হবে ততগুলা এক সাথে ছাড়তাম। তাতে সব গুলোর মচমচে ভাব বলেন আর রঙ বলেন একই থাকত।

(উপরের ছবিতে) ভাল করে দেখুন কিছু ওভার ফ্রাই হয়েছে, আর কিছু কম ফ্রাই হয়েছে। তাই এগুলো কোয়ালিটি অনিয়ন ভাজি (পেয়াজু) নয়।

আর ২য় ফটোর পেয়াজু পুড়ে কাল হয়ে গেছে, খাওয়ার সাথে সাথে ১৪নাম্বারে দৌড়তে হবে।

দেখুন তো এই ফটো কেমন লাগে (নীচে)। তবে এই ফটো আমার নয় । নেট থেকে নেয়া।

আর একট কথা- যখন এই ধরণের তেলে ভাজা খাবারের ফটো তুলতে চান, তখন যে সব তেলে ভাজার ফটো তুলবেন সে গুলো অবশ্য আধা ভাজা করবেন, তাহলে ফটোতে রং উজ্জ্বল দেখবে। প্রথম ফটোতে লক্ষ্য করুন যে পেয়াজুগুলো কম ভাজা হয়েছে সেগুলো দেখতে কেমন সুন্দর দেখচ্ছে।

প্রিয় পাঠক্‌ আপনারাও রেসিপি নিয়ে এমন মজার গল্প কিংবা অভিজ্ঞতার কথা আমাদের জানান, আমরা তা পাঠকদের জন্য তুলে ধরব। আমাদের ইমেইল করতে পারেন, ইমেইলঃ

happy wheels

About ভূলু | ভূলু'স রেসিপি

আমি 'ফজলুর নূর ভূলু'। আমার রান্নাঘরের অরিজিনাল সব রেসিপি নিয়েই আমার এই ব্লগ - "ভূলু'স রেসিপি"। এই রেসিপি ব্লগের মাধ্যমে আমি দেশি খাবার আর তার অতুলনীয় স্বাদের বৈচিত্র তুলে ধরতে চাই। সাথে আমাদের আঞ্চলিক এবং ঐতিহ্যবাহী রান্নাগুলোও থাকবে। ভবিষ্যতে এইসব রেসিপি আর ব্লগের গল্পগাঁথা নিয়ে একটি বই প্রকাশের ইচ্ছে আছে।

৬ thoughts on “পেয়াজু তৈরী এবং একজন অভিজ্ঞ পাচকের অভিজ্ঞতা

Comments are closed.