ছুটির দিনে, সকালের নাস্তায় গরম গরম ফ্রেঞ্চ টোস্ট (French Toast) খেয়ে দেখেছেন কখনো? ছুটির সকালটা চনমনে করা দারুণ এক নাস্তা এটি। একবার ভাবুনতো পাওরুটির পুরু একটা টুকরা, ফেটানো ডিম, দুধ আর দারুচিনির মিশ্রণে চুবিয়ে ফ্রাই ফ্যানে টোস্ট করে সামান্য মাখন ছড়িয়ে গরম গরম ফ্রেঞ্চ টোস্ট। আহ! তুলনা হয়না সকালের নাস্তায়।
খুব সহজে তৈরি করা যায় আর স্বাদের ভিন্নতা এবং পুষ্টিগুণ, সব মিলিয়ে ফ্রেঞ্চ টোস্ট হতে পারে আপনার ব্যস্ত জীবনের সকালের নাশতায় এক চমৎকার এবং ঝটপট রেসিপি।
ফ্রেঞ্চ টোস্টটা ভাল হবে যদি পাওরুটির টুকরাগুলো পাতলা না হয়ে বরং একটু পুরু হয়, আর রুটিটা ২ দিনের পুরনো হয়। রুটির টুকরাগুলো পুরু হলে ডিম-দুধের মিশ্রণে ডোবালে ভেঙ্গে যাবে না, ভালভাবে ভাজাও যাবে।
অবশ্য ২ দিনের পুরনো পাওরুটি দিয়ে ফ্রেঞ্চ টোস্ট করার ধারণাটা এর জন্মলগ্ন থেকেই। ইউরোপে পঞ্চদশ শতাব্দীতে ২/৩ দিনের পুরনো শক্ত হয়ে যাওয়া রুটি ফেলে না দিয়ে তা পূনরায় ব্যবহার যায় কিনা – এই ধারণা থেকেই এর সূচনা। অবশ্য তারও কয়েকশ বছর আগে থেকেই এই টোস্টের মত করেই কিছু খাবার বিভিন্ন অঞ্চলে তৈরির প্রক্রিয়া মানুষ জেনে গিয়েছিল। যাই হোক এবার দেখে নিন ফ্রেঞ্চ টোস্টের রেসিপিটা। এটি এই ব্লগের ১০১তম পোস্ট।
উপকরণঃ
- ৮ টুকরা পাওরুটি, ২ দিনের পুরনো শক্ত হলে ভাল
- ৪ টা ডিম
- ২/৩ কাপ দুধ
- ২ চিমটি দারুচিনি গুঁড়ো
- মাখন/ ঘি- সামান্য
- ২ চা চামচ কমলালেবুর খোসার বাহিরের অংশ কুচানো (orange zest)
- ৩/৪ টেবিল চামচ চিনি
প্রস্তুত প্রণালীঃ
খুব সহজ এই রেসিপিটির প্রস্তুতিতে লাগবে ১৫ মিনিট আর রান্নায় লাগবে আরো ১০/১৫ মিনিটের মত।
১. একটা মাঝারি সাইজের বোলে (mixing bowl) এ ডিম ফেটে, দুধ আর দারুচিনি গুঁড়া দিয়ে তাতে কমলার খোসার কুচানো অংশ দিয়ে দিন। ভাল করে মেশাতে হবে। বোলের ভেতরের অংশ যাতে খোলামেলা হয়, এতে রুটির টুকরাগুলো সহজে উল্টে পাল্টে ডিম-দুধে মেশানো সহজ হবে।
২. মাঝারি আঁচে চুলায় ফ্রাই ফ্যান চাপিয়ে তাতে সামান্য মাখন গলিয়ে নিন। সামান্য সয়াবিন তেল দিতে পারেন, না দিলেও চলবে। আমি তেল না দিয়েই ভাজি। আর মাখনের উপর তেল দিলে তেল পুড়ে যাবে না।
৩. এবার রুটির প্রতিটি টুকরার দুইদিক আলতো করে ডিম-দুধের মিশ্রণে চুবিয়ে নিন, যাতে মিশ্রণটি রুটিতে চুষে নেয়। হালকা ঝাঁকি দিয়ে অতিরিক্ত মিশ্রণটি রুটির গা থেকে ঝেড়ে দিন।
৪. মিশ্রণে চুবানো রুটির টুকরা ফ্রাই ফ্যানে দিয়ে ভাজুন যতক্ষণ না একদিক ভাল করে ভাজা হয়ে বাদামি রঙ ধারণ করে। এবার উল্টে দিয়ে রুটির অন্য দিকও একই রকম বাদামী করে ভেজে নিন।
৫. এবার টোস্টের উপরে একটু মাখন ছড়িয়ে দিয়ে পরিবেশন করুন। টোস্ট গরম বলে মাখন গলে ছড়িয়ে পড়বে। ডিম-দুধের মিশ্রণে চিনি না মেশালে এসময় মধু মিশিয়েও খেতে পারেন। দারুণ লাগবে।
তারপর ধোঁয়া ওঠা এককাপ গরম চা। সাথে সকালের মচমচে পত্রিকাটা নিয়ে বসুন। কারণ আজ ছুটির দিন।
রেসিপি নোটঃ
১. ডায়াবেটিস রোগিদের জন্য চিনির বিকল্প যেকোন কিছু ব্যবহার করতে পারেন, তখন অবশ্য কুসুম ছাড়া ডিমের সাদা অংশ নেবেন। সেক্ষেত্রে এটি ডায়াবেটিক রেসিপি হিসেবে চালিয়ে দিতে পারবেন, আবার সবাই খেতে পারবে।
২. টোস্টের পাওরুটির টুকরাগুলো একটু পুরু আর ২ দিনের পুরনো শক্ত হলে ভাল হবে।
ভূলু, ১৬/১০/২০১৪
ছবিটি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহিত
happy wheels