যখন গ্রামে ছিলাম, দেখেছি শুক্রবারে জুমার পর মুরুব্বি, জোয়ান আর বাচ্ছারা জিলাপি হাতে মসজিদ থেকে বের হচ্ছে। নামাজের পর মিলাদের তবুরক ছিল সে জিলাপি। এ দৃশ্য শহরেও দেখা যায়। গ্রামে বিয়ের অনুষ্ঠানে বরপক্ষকে জিলাপি আনতেই হবে, এমনটাই ছিল রেওয়াজ। আর শহরে এখন রমজানে ইফতারে প্রতিদিনের অনুষঙ্গ এই জিলাপি। সেটা ঘরের ইফতারে হোক আর আনুষ্ঠানিক কোন ইফতার হোক, জিলাপি দেখা যাবেই। বছরের অন্য সময় হয়ত জিলাপি’র এতটা দাপট চোখে পড়বে না। যাই হোক, জিলাপির এই রেসিপিটি দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া থেকে রওনক জাহান। এটি একটি অতিথি পোষ্ট। [আপডেটঃ রেসিপিটি পুণঃপোষ্ট করা হল]
জিলাপির খামির তৈরির জন্য লাগবেঃ
- ১ কাপ ময়দা
- দেড় টেবিল চামচ বেসন
- ১ চা চামচ ঈস্ট (Yeast)
- ১ টেবিল চামচ তেল
- ১ চা চামচ চিনি
- ১/২ কাপ ঈষদুষ্ণ পানি
- জাফরান (ঐচ্ছিক)
- তেল (ডুবো তেলে ভাজার জন্য)
- সিরার তৈরির জন্যঃ
- ২ কাপ চিনি
- ১কাপ পানি
প্রস্তুত প্রণালীঃ
সরঞ্জাম হিসেবে আমরা ব্যবহার করব – খালি সসের বোতল, দেশে রেস্তোরায় দেখা যায় এমন প্লাস্টিকের টিউবাকৃতি চিকন মুখের বোতল হতে পারে আর ১.৫” ডিপ ফ্লাট কড়াই
১. ঈষদুষ্ণ পানিতে ঈস্ট (Yeast) এবং চিনি মিশিয়ে ৩ মিনিটের জন্য ভিজিয়ে রাখতে হবে
২. যখনএই মিশ্রণে বুদবুদ দেখা যাবে, তখন এতে ময়দা, বেসন, জাফরান এবং তেল মিশিয়ে অল্প পরিমাণ পানি দিয়ে মিশ্রণটি ঘন করতে হবে
৩. মিশ্রণটি অন্তত আধ ঘন্টার জন্য গরম জায়গায় (রান্নাঘরে হতে পারে) রাখতে হবে
৪. সিরা তৈরি করতে, পানি ও চিনি সস প্যানে দিয়ে চুলায় বসাতে হবে। চিনি গলে সিরা ঘন হয়ে গেলে চুলা বন্ধ করতে হবে
৫. সিরা চুলা থেকে নামিয়ে রাখতে হবে। জিলাপিগুলো ডুবাতে এই সিরা ঈষদুষ্ণ হওয়া প্রয়োজন
৬. এবার ১.৫” ডিপ ফ্লাট কড়াইতে তেল ঢেলে ৩ মিনিট গরম করতে হবে। তেলে সামান্য মিশ্রণ দিয়ে তেলের তাপ পরীক্ষা করে নিন
৭. খালি সসের বোতলে জিলাপির মিশ্রণটি ভরে গরম তেলে জিলাপির আড়াই প্যাঁচ দিয়ে যেতে হবে। প্রতিটাই একেকটা জিলাপি
৮. জিলাপির একপিঠ ভাজা হলে উল্টে অপর পিঠ ভাজতে হবে। এভাবে জিলাপিগুলো বাদামী করে ভাজতে হবে
৯. তেল থেকে উঠিয়ে জিলাপি ঈষদুষ্ণ সিরায় ছাড়ুন। এভাবে জিলাপিগুলো ৮-১০ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে
১০. সিরা থেকে উঠিয়ে গরম গরম জিলাপি পরিবেশন করুন
রান্নার সময়ঃ ৩০মিনিট
খেতে পারবেনঃ ৬জন
রওনক জাহান প্রবাসী বাংলাদেশি। থাকেন অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের গোল্ড কোস্ট এলাকায়। তিনি রান্না করতে ভালবাসেন, নতুন নতুন রান্না শিখতে এবং শেখাতে ভালবাসেন। তাঁর রেসিপি ব্লগে তিনি বাংলাদেশের নিজস্ব খাবারের স্বাদ, বৈচিত্র এবং ঐতিহ্য তুলে ধরছেন সারা পৃথিবীর কাছে। রওনকের ফেইসবুক পেইজে তাঁকে অনুসরণ করতে পারেন।
আমি নিশ্চিত, জিলাপি নিয়ে আপনারও অনেক মজার এবং রসালো অভিজ্ঞতা আছে। সেইসব অভিজ্ঞতা আমাদের জানাতে পারেন।
happy wheels